হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম, বিপাকে সাপে কাটা রোগীরা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিভেনম না থাকায় ভুক্তভোগীরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ মুহূর্তে সাপে কাটা রোগী এলে অ্যান্টিভেনম না থাকার কারণে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) রাতে সদর উপজেলার দিঘড়ী গ্রামের টুনটুুনি খাতুন (৪০) নামে এক গৃহবধূকে ঘরের ভেতর থেকে সাপে কামড় দেয়। এ সময় তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দুটি এ্যান্টি স্নেক ভেনম ডোজ সম্পন্ন করেন।

কিন্তু তার আরো একটি ডোজ প্রয়োজন হয়। ইতিমধ্যে হাসপাতালের এ্যান্টিভেনম শেষ হয়ে যায়। মহিলাটি দরিদ্র হওয়ায় তার কেনার মত সামর্থ্য না থাকলে স্থানীয় একটি সংগঠন ও কিছু মানুষের সহায়তায় একটি ডোজ ক্রয় করে তার ডোজ পূর্ণ করা হয়।

আরো পড়ুন=>> চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের শোক মিছিল

অপর দিকে তানভির (৯) নামের এক শিশু গতকাল সকালে সদর হাসপাতালে আসে। তার শরিরে সাপে কাটার চিহ্ন পাওয়া যায়। কিন্তু হাসপাতালে এ্যান্টিভেনম না থাকার কারনে তাকে সদর হাসপাতাল থেকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করা হয়।

অপরদিকে গতকাল সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের বলেশ্বরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৪) নামের একজন সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।

তিনি সকালে ধান ক্ষেত দেখতে মাঠে যান। স্রোত পার হওয়ার সময় পাশে থাকা একটি সাপ তাকে কামড় দেয়। পরে তিনি ১১ টার সময় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে চিকিৎসক তাকে পরিক্ষা নিরীক্ষা করে শংকামুক্ত বলেন।

জানা গেছে, দেশে বর্ষা মৌসুম এবং বিশেষ করে ধান কাটার মৌসুমে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন উপজেলায় সাপে কাটা রোগী বাড়ছে এবং ধরা পড়ছে বিষধর সাপও। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলাও বেড়েছে বিষধর সাপের আনাগোনা।

সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চাহিদা পাওয়ার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করে জেলা সদর হাসপাতালে। প্রতি বছর চাহিদার ভিত্তিতে সদর হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করার কথা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাপের কামড়ে মৃত্যু থেকে রক্ষা পেতে হলে উপজেলা পর্যায়েও পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনমের ব্যবস্থা করার বিকল্প নেই। জেলায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনায় তারা দুষছেন সময়মতো সাপে কাটার ইঞ্জেকশন না পাওয়াকে।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, গতকাল থেকে অ্যান্টিভেনম ইঞ্জেকশন মজুদ নেই। সাপে কামড়ানোর পর একজন রোগীকে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় অ্যান্টিভেনম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অনেক চিকিৎসক ঝুঁকি নিতে চাইবেন না।

এ কারণে হাসপাতাল রোগী আসলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে অ্যান্টিভেনমের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আমরা রবিবারের মধ্যে এটা পেয়ে যেতে পারি।

জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে একাধিক বার ফোন করেও পাওয়া যায় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *