দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সমর্থিত পূর্ণ প্যানেলের নিরস্কশ জয়

‘সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্সের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত, রাজনৈতিক, সামাজিক বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সন্তোষ প্রকাশ, কৃতী ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নঈম জোয়ার্দ্দারের সাথে বিজয়ী নেতৃবৃন্দের ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়’

উৎসব মূখর পরিবেশে প্রায় একযুগ পরে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শনিবার (০৩ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডপাড়ায় অবস্থিত সংগঠনটির নিজস্ব ভবনে আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ভোট গ্রহণ চলে।

পরে সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেন প্রধান নির্বাচনী কমিশনার এ্যাড. আশরাফ আলী। এসময় তিনি বলেন- চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। আর ভোট গ্রহণ হয় দুটি ক্যাটাগরিতে একটি হলো সাধারণ সদস্য ও অপরটি হলো সহযোগী সদস্য। অনেক আইন আদালতের কার্যক্রম শেষ করে এই অবশেষে ভোট অনুষ্ঠিত হলো। ভোটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোন দুর্ঘটনা ও অঘটন ঘটেনি। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।

আরো পড়ুন=>> চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স নির্বাচনে কে কত ভোট পেলেন?

এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। আমরা তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগামীতেও যেন এমন শান্তিপূর্ণভাবে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমি মনে করি। বক্তব্যের পর আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

এদিকে, এ নির্বাচনে দুটি প্যানেলের মধ্যে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সমর্থিত পূর্ণ প্যানেল নিরংকুশ জয় পেয়েছে। এদিকে, সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ দেওয়াসহ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

ছবি: আজকের খাসখবর

বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার চেম্বার ভবনে উপস্থিত হয়ে বিজয়ীদের সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়সহ মতবিনিময় করে অভিনন্দন জানান।

এসময় দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন- আপনারা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন, আপনারা এখন থেকে ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কাজ করবেন, সেই প্রত্যাশা করি। একইসাথে চেম্বারের প্রয়োজনে ও সকল ভালো কাজে আমরা আপনাদের সাথে সর্বদা আছি ও ভবিষ্যতে থাকবো।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্টির (২০২৪-২০২৫ ও ২০২৫-২০২৬) দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচনে সকাল থেকে ছিলো উৎসবমুখর পরিবেশ। সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগে থেকেই এ ভোট ঘিরে ছিলো উৎসাহ-উদ্দীপনা। যার ফলে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলা থেকে আগত সকল ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের ভোট প্রয়োগ করেন। পরবর্তীতে বিকেল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষ হলে পরে সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ্যাড. আশরাফ আলী।

এ ভোটে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সমর্থিত ইয়াকুব হোসেন মালিকের নেতৃত্বাধীন ‘প্রগতিশীল ও উন্নয়ন পরিষদ’ পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হয়। এছাড়া একই প্যানেলের সহযোগী সদস্যদের মধ্য থেকে ৫ জন পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হোন। এবারের নির্বাচনে সাধারণ সদস্যদের ৫৮৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছেন ৪৬৫ জন।

ছবি: আজকের খাসখবর

অর্থাৎ শতকরা হার ৭৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। অপরদিকে, সহযোগী সদস্যদের ২১৬ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছেন ১৫৭ জন। যার শতকরা হার ৭২ শতাংশ।

এদিকে, ভোট চলাকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া নিরাপত্তা ছিলো। এছাড়া ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন, এফবিসিসিআিই’র পরিচালক ও সাবেক সহ-সভাপতি চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক আহ্বায়ক, সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের জগলু, সাবেক চিৎলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজিব হাসান কচি, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মানিক আকবর ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সভাপতি সরদার আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান চাঁদ, প্রথম আলোর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি এবং নাগরিক টেলিভিশনের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি হুসাইন মালিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এনির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন এ্যাড. আশরাফ আলী, সহকারী নির্বাচন কমিশনার এ্যাড. এম.এম.মনোয়ার হোসেন সুরুজ ও কাইজার হোসেন জোয়ার্দার শিল্পী, আপিল বোর্ডের আহবায়ক ছিলেন এ্যাড. এস.এম. শাহজাহান মুকুল, সদস্য ছিলেন এ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন ও এ্যাড. তসলিম উদ্দিন ফিরোজ এবং সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার/পোলিং অফিসার হিসেবে ছিলেন এ্যাড. ইফতিকার হোসেন (খোকন), এ্যাড. মোর্তাজান হোসেন, এ্যাড. ইমতিয়াজ আহমেদ (উজ্জল), এ্যাড. এস.এম. শরীফ উদ্দীন (হাসু), এ্যাড. রবিউল হক (রবি), এ্যাড. মোর্ত্তজা মিল্টন, এ্যাড. আতিয়ার রহমান (১), এ্যাড. ইজাজুল ইসলাম (ইজাজ), এ্যাড. মনিরুল হাসান (পলাশ) ও এ্যাড. সৈয়দ ফারুক উদ্দিন আহম্মেদ, জর্জ কোর্ট, চুয়াডাঙ্গা।

ছবি: আজকের খাসখবর

এনির্বাচনে প্রগতিশীল ও উন্নয়ন পরিষদ থেকে বিজয়ীরা হলেন- সাধারণ সদস্যদের মধ্য থেকে ইয়াকুব হোসেন মালিক, শাহারিন হক মালিক, মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, সালাউদ্দীন মো. মতুর্জা, এস এম তসলিম আরিফ বাবু, একেএম সালাউদ্দীন মিঠু, আরিফ হোসেন জোয়ার্দ্দার সোনা, তাজুল ইসলাম তাজু, সেলিম আহমেদ, হারুন অর রশীদ, কিশোর কুমার কুন্ডু, এনামুল হক শাহ মুকুল, মতিয়ার রহমান ফারুক ও শামসুজ্জামান খোকন। এছাড়া একই প্যানেলের সহযোগী সদস্যদের মধ্য থেকে বিজয়ীরা হলেন- নাসির আহাদ জোয়ার্দ্দার, সুরেশ কুমার আগরওয়ালা, এএনএম আরিফ, কামরুল ইসলাম হিরা ও পবিত্র কুমার আগরওয়ালা।

নির্বাচনের শুরু থেকেই ‘প্রগতিশীল ও উন্নয়ন পরিষদ’ এর প্যানেল ঘিরে বাড়তি আগ্রহ ছিল ভোটারদের। কেননা, দীর্ঘদিন ধরে এই প্যানেলের নেতৃবৃন্দ চেম্বারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এবারও তারা পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে বিজয়ী হয়ে আবারও ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দেবার সুযোগ পেলেন।

বিজয়ের পর নেতৃবৃন্দ বলেন- আমাদের ওপর ভোটাররা আস্থা রেখেছেন। আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন। আমরা ভোটারদের তাদের আস্থার প্রতিদান দেবো। আর ব্যবসায়ীদের কল্যাণ হয় এমন সব উদ্যোগ আমরা নেবো। এসময় নেতৃবৃন্দ কৃতী ব্যবসায়ী ও চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান দিলীপ কুমার আগরওয়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন- আমাদের এই প্যানেলের নিরংকুশ বিজয় এসেছে মূলত তার কারণে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, মোট ২৮ জন ব্যবসায়ী চেম্বার নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে অংশ নেন। এবারের নির্বাচনে সাধারণ ভোটার ছিলেন ৫৮৭ জন ও সহযোগী সদস্য হিসেবে ভোটার ছিলেন ২১৬ জন। এর আগে চেম্বার অব কমার্সের এই নির্বাচন স্থগিত করতে রিট করেন আলাউদ্দীন হেলা। তখন ৬ মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিতের আদেশ আসে। এর প্রেক্ষিতে ইয়াকুব হোসেন মালিক আদেশের ব্যাপারে আপিল করলে পরে মাননীয় জজ-ইন-চেম্বার ৮৯০০ নম্বর রিট পিটিশনটির অন্তবর্তীকালীন ওই আদেশটি স্থগিত করে পুনরায় আদেশ দেন। ফলে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে। যারফলে শনিবারই (০৩ আগস্ট) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়।