সদর হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ডে শয্যা সংকট

চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভেরিয়েন্টের জ্বর ৩ দিনে দুটি ওয়ার্ডে মোট ভর্তি ৫৪৫ জন

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর-ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। দুই মেডিসিন ওয়ার্ডের মেঝেতেও ঠাঁই মিলছে না রোগীর। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড সুত্রে জানা যায়, গত তিন দিনে দুটি ওয়ার্ডে মোট ভর্তি হয়েছেন ৫৪৫ জন। পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ২৬০ জন এবং মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ২৮৫ জন। এর মধ্যে উভয় ওয়ার্ডে ছুটি পেয়েছেন ১৪৪ জন। এর মধ্যে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ছুটি পেয়েছে ৮৭ জন এবং পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ছুটি পেয়েছে ৫৭ জন। এরমধ্যে ৮০ শতাংশই জ্বরে আক্রান্ত। এছাড়া প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৪০০-৫০০ রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার।

এদিকে, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুই ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা যায়, রোগীদের চাপে তিল পরিমান জায়গা নেই। মেঝেতে নিচ্ছে চিকিৎসা। সব থেকে কষ্ট পাচ্ছেন বয়োবৃদ্ধরা। বেশিরভাগ জ্বরে আক্রান্তরায় বয়োবৃদ্ধ। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা।

আরো পড়ুন=>> ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে মেহেরপুরে দুই প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

এসময় প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বর, ঠান্ডা, কাশির রোগী রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই হলো শিশু এবং বয়োবৃদ্ধ।
রহিমা খাতুন নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, গত ৩ দিন আগে আমার মায়ের হঠাৎ জ্বর আসে। পরে তীব্র জ্বর শুরু হলে গতকাল সকালে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এছাড়া পরিবারের একাধিক সদস্যও জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। কোন বেড পাইনি। মেঝেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

আব্দুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন জ্বর, ঠান্ডা নিয়ে আজ সকালে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসলে তিনি আমাকে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বেডে জায়গা না পেয়ে মেজেতেই চিকিৎসা নিচ্ছি।

মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের নার্স রেহেনা খাতুন বলেন, অনেক বেশি রোগি মেডিসিন ওয়ার্ডে জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ১১ টি বেডের জন্য একজন মাত্র নার্স আমি। অথচ এখানে বেড আছে ৪৬ টি এবং কেবিন আছে ৩টি। এর পরেও মেঝেতে শুয়ে আছে আরো অনেক রোগি। এতো বেশি রোগির চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, এখন প্রায় মানুষই ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি এটাও বলেন, এই জ্বর গুলো বেশির ভাগই করোনা ভ্যারিয়েন্ট। হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে তিল পরিমান জায়গা নেই। এটি ভাইরাসজনিত জ্বর। বৃষ্টির কারণে কিছুটা ঠান্ডা আবার বাইরে গরম। তাই এই সময় সতর্ক থাকতে হবে।

এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন জ্বর-কাশি আক্রান্ত হয়েছে ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীকে বেশি করে পানি পান করাতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। বাশি-পঁচা খাবার খাওয়া যাবেনা।