জীবননগরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪ গ্রেফতার-১

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা কেন্দ্রীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি-সাধারন সম্পাদকের পদ গঠনকে কেন্দ্র করে বাঁকা গ্রামের দু’পক্ষের শুক্রবার (১২ জুলাই) জুম্মা নামাজ শুরুর আগেই বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সৃষ্ট সংঘর্ষে দু’জন মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় বিএনপি নেতা রাজা মিয়াকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। ঘটনার পর পরই রাজা মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেন। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে দু’টি পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে কোন সময় দু’পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে।

ঘটনার সময় আহতরা হলেন, বিএনপি নেতা আব্দুল খালেক (৬৫) ও রোকনুজ্জামান (২০)। আহতদের মধ্যে আব্দুল খালেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং রোকনুজ্জামানকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন=>> চুয়াডাঙ্গার উথলীর গ্রামের দু’শো বছরের পুরনো রূপির চারা বটগাছ

উপজেলার বাঁকা গ্রামবাসী সুত্রে জানা যায়, বাঁকা গ্রামের নুরুল হক মালিতা দীর্ঘ ২০-৩০ বছর ধরে বাঁকা স্কুলপাড়া কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু তিনি বর্তমানে বয়সের ভারে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে না পারায় তিনি সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে নতুন সভাপতি নির্বাচনের জন্য সকল মুসল্লিকে আহবান করেন।

জুম্মার নামাজের আগেই বিষয়টি নিয়ে মুসল্লিরা আলোচনায় বসেন। এসময় মসজিদের জমিদাতা নুরুল মালিথার ছেলে রাজা মিয়া, ফারুক ও শান্তি বলে আমাদের মধ্যেই সভাপতির পদটি থাকতে হবে। কিন্তু গ্রামবাসী তার সে প্রস্তাবে রাজি হয় না। গ্রামবাসীর দাবি খোকন মিয়া বা শাহাবুদ্দিন মালিতার মধ্যে যে কেউ একজনকে সভাপতি করতে হবে। কিন্তু নুরুল মালিথার ছেলে রাজা মিয়া তা মানতে নারাজ।

এ নিয়ে দু’পক্ষের সমর্থকদের মাঝে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত ৪-৫ জন মুসল্লি আহত হন। পরে আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।

আহতদের মধ্যে রোকুনুজ্জামনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে এবং আব্দুল খালেককে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অন্যরা চিকিৎসা শেষে বাড়ী ফিরে গেছেন। আহত আব্দুল খালেক ও তার জামাতা রাজা মিয়া দু’জনই বিএনপি নেতা। তবে গ্রামের শান্তিপ্রিয় মানুষের মধ্যে শঙ্কা আবার দু’পক্ষের মধ্যে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম জাবিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাঁকা স্কুলপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতির পদকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের দু’জন মারাত্মক আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর রাজা নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় এবং গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।