চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে : অধিকাংশই শিশুরা আক্রান্ত

চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এরমধ্যে অধিকাংশই শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এক সপ্তাহ যাবত কলেরা আইভি ফ্লুইড স্যালাইনের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাইরে থেকে রোগীরা স্যালাইন কিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১৭৪ রোগী ভর্তি হয়েছেন রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় দেড় শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী। এদিকে চারদিন যাবত কলেরা স্যালাইন সাপ্লাই না থাকায় রোগী ও স্বজনদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

আরো পড়ুন=>> ‘যারা খেলাকে ভালবাসে, তারা অপরাধ থেকে দূরে থাকে’

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের এক স্বজন বলেন, আমার চাচা আজ তিন দিন যাবত ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টা কলেরা স্যালাইন দিতে হচ্ছে। সাপ্লায় না থাকার কারণে বাইরের ফার্মেসি থেকে কলেরা স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। একেক সময় একেক মূল্য নিচ্ছেন ফার্মেসি থেকে। হাসপাতালে সাপ্লাই না থাকায় ইচ্ছেমত কলেরা স্যালাইনের মূল্য নিচ্ছেন।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে দেড় বছরের শিশু তাসনিম তিশা। শিশুটির মা জানান, গত দুদিন থেকে পাতলা মল আর বমি হচ্ছিল মেয়ের। গত পরশু সকালে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করে। হাসপাতাল থেকে খাওয়া স্যালাইনসহ যাবতীয় ওষুধ দিলেও কলেরা স্যালাইন সাপ্লাই নেই জানিয়ে বাইরে থেকে কিনে আসতে বলে। দু এক দিন সাপ্লাই না থাকতে পারে। টানা চারদিন সাপ্লাই নেই জেলা একমাত্র সদর হাসপাতালে। বিষয়টি দুংখজনক।

আম্বিয়া খাতুন নামে এক নারী বলেন, তিনদিন আগে তাঁর আড়াই বছরের ছেলের হঠাৎ করেই পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্যালাইন খাওয়ানোর পরও কোনো কাজে আসেনি। অবশেষে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ না থাকলেও বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রথম দিন একটা কলেরা স্যালাইন পেলেও আর দেয়নি। বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও’র) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, গরমে খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ফুড পয়জনিং এর কারণে প্রাপ্তবয়স্করা ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন। আর ঠান্ডা গরমের জন্য (আবহাওয়া পরিবর্তন) শিশুরা রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়া হচ্ছে। কলেরা স্যালাইনের বিষয়ে বলেন, চাহিদা পাঠানো হয়েছে, দ্রুত চলে আসবে।