চার বছরেও শেষ হয়নি দুই বছরের কাজ

কুমার নদীর ওপর সেতু নির্মাণ

ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রি-স্ট্রেজড গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। এতে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ব্রিজের সুবিধাভোগী কৃষিপ্রধান অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ।

কুষ্টিয়ায় ‘পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’ এর অধীন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিত্তিপাড়া-জামজামি ভায়া ঝাউদিয়া সড়কের কুমার নদীর ওপর এই ব্রিজটি দুই বছর বা ২৪ মাস সময় ধরে নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চে। নির্ধারিত সময়কাল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় ঝুলে আছে প্রকল্পটি।

ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় অত্র অঞ্চল ছাড়াও ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু ও চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার সঙ্গে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার একমাত্র সংযোগ সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তা ছাড়া দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এলজিইডি ও ঠিকাদারের গাফিলতি ও যোগসাজশে অবহেলায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্নের দাবি স্থানীয়দের। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, খুব শীঘ্রই ব্রিজটির নির্মাণকাজ শেষ করে জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

আরো পড়ুন=>> ভারতে পাচারের সময় দুই রোহিঙ্গা নারী আটক

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়ার বিত্তিপাড়া-জামজামি ভায়া ঝাউদিয়া সড়কের কুমার নদীর ওপর প্রি-স্ট্রেজড গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। এর নির্মাণকাল ছিল দুই বছর বা ২৪ মাস।

কিন্তু নির্ধারিত সময় অর্থাৎ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি এর নির্মাণ কাজ। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের কাজ ঝুলে থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণ। এ ছাড়া কৃষিপণ্য বহন করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্রিজটির নির্মাণকাজ শেষ করে স্বাভাবিক চলাচলের রাস্তাটি মেরামতের দাবি স্থানীয়দের।

এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত আলীর (৫৫) অভিযোগ, ‘চার বছর আগে শুরু হয় ব্রিজের নির্মাণ কাজ। গ্রামের মানুষের কষ্ট যেন দেখার কেউ নেই। এই নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ আজ চার বছরেও শেষ হচ্ছে না। কি এর সমস্যা, আর কিইবা তার সমাধান, এটা দেখার কেউ নেই। মাঠ থেকে আমাদের ফসল আনতে অনেক কষ্ট হচ্ছে, এ কষ্টটা তো আমরাই পাচ্ছি।’

সচেতন নাগরিক কমিটি ‘সনাক’ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতা থাকলে অবশ্যই তার জবাবদিহিতাসহ শাস্তি হওয়া উচিত। টেকসই উন্নয়ন অভিযাত্রা বাস্তবায়নে সরকারের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার পরও কেন এমন জনভোগান্তি হবে? এতে হয় তাদের অনিয়ম অবহেলা আছে অথবা তারা অযোগ্য।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘উজানগ্রাম-ঝাউদিয়া সড়কের কুমার নদীর ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজটির নির্মাণ কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। তবে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।’